ইভেন্ট : তারুণ্যের চোখে বাংলাদেশবিষয়: তারুণ্যের অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানলেখকঃমো.হাছিবুল বাসারশিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।ই-মেইলঃ mdhasibulbashardu2018@gmail.comদলের নামঃ বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধাঅপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশ সজ্জিত নদী পাড়ের টুঙ্গিপাড়ার ঐতিহ্যবাহী মধ্যবিত্ত শেখ পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্ম নেন বাঙ্গালির জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রেরও স্রষ্টা।মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তরুণ প্রজন্মের কাছে এক মহান আদর্শ ব্যক্তিত্ব। তিনি তারুণ্যের চোখে অপ্রতিরোধ্য শক্তি ও অনুপ্রেরণার বাতিঘর।তরুণদের কাছে তিনি একাধারে জীবন সংগ্রামের, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ও আদর্শের প্রতীক; অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কারিগর, উদার ব্যক্তিত্ব, সফল রাজনীতিবিদ।অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী, রাজনৈতিক দূরদর্শী নেতা,বাঙালির প্রিয় ভালোবাসার মানুষ, অসাধারণ মেধার অধিকারী বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শন তরুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন।অমিত আত্মবিশ্বাস,রাজনৈতিক প্রজ্ঞা,প্রগতিশীল নেতৃত্ব, সাধারণের লালিত স্বপ্নের প্রতি অবিচল আস্থা, মানুষের সাথে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহনমুখী চিন্তাধারার গুনাবলী বঙ্গবন্ধুকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অবিসংবাদিত নেতা করে তুলেছে।তাছাড়া অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারা,ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাব পোষণের ক্ষমতা তাকে একজন খাঁটি বাঙ্গালিরও পরিচয় দিয়েছে।বঙ্গবন্ধু জীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়ে আমরা জানতে পেরেছি, তার চিন্তা-চেতনা ছিল তারুণ্যকেন্দ্রিক। সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ও আবেগই পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদী রূপ ধারণ করে তার মন ও মননে সূচনা ঘটিয়েছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের। বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন, অধিকার পেতে হলে নীরব থাকলে চলবে না; সবাইকে জাগাতে হবে, তাদের মনে গেঁথে দিতে হবে স্বাধীনতার মন্ত্র।৭ মার্চের ভাষণের ধারাবাহিকতায় গোটা বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তখন স্লোগান ছিল একটাই- বীর বাঙালি অস্ত্র ধর; বাংলাদেশ স্বাধীন কর। মুক্তিযুদ্ধে হাজারও তরুণ বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করেছিল স্বাধীনতার জন্য। তারুণ্যের সেই আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয়।নতুন প্রজন্মের কাছে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মাত্র ১০ মাসের মাথায় শহীদের রক্তে লিখিত সংবিধান দেশবাসীকে উপহার দেন।সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষ মূলনীতি লিপিবদ্ধ করে তিনি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন। আবার অনেকের চোখে তিনি একজন সফল কূটনীতিবিদ। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে ১৪০টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন; জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে সদস্যপদ লাভ করেছিল বাংলাদেশ।বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ছিল অসহায় মানুষের সেবা করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা।বর্তমানে বাংলাদেশে আদর্শ বা উদার রাজনীতির সংকট চলছে। যে তরুণরা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা; তারা আজ রাজনীতিবিমুখ। এখন চলছে অর্থ আর ক্ষমতার রাজনীতি।বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শের রাজনীতির কাছে বড্ড অচেনা বর্তমান রাজনীতি। আর সে জন্যই তরুণ সমাজ আজ রাজনীতিবিমুখ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হার না-মানা সংগ্রামমুখর জীবন কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখার অবকাশ নেই।তরুণদের মনে বঙ্গবন্ধু ভাবনা জন্মালে দেশ এগিয়ে যাবে।তরুণদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আর্দশের চেতনা গড়ে দিতে যা প্রয়োজনঃ১.তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও বঙ্গবন্ধুর চেতনা পৌঁছে দিতে বঙ্গবন্ধুর লেখা প্রকাশিত তিনটি বই "অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারে রোজনামচা,আমার দেখা নয়াচীন" বইগুলো সবার আগে পৌঁছে দিতে হবে।এতে তরুণরা বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান আরোহনের পাশাপাশি জীবনকর্মের সঠিক ইতিহাস পাঠোদ্ধারে সক্ষম হবে।২.স্কুল-কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই দিয়ে বঙ্গবন্ধু কর্ণার সৃষ্টি করা যেতে পারে।যা ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে দেখা মেলে।ফলে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুকে জানার জন্য ক্রমশই আগ্রহী হবে।৩.বঙ্গবন্ধু সংস্কৃতিবান মানুষ ছিলেন।তাই সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার মাধ্যমে তরুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে গেঁথে দেওয়া সম্ভব।কেননা সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে তরুণদের আকৃষ্ট যাবে।বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে প্রতিটি পরিবারকে ধারণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে তরুনদের মধ্যে গেঁথে দেওয়া কেবল রাষ্ট্রের একক দায় হিসেবে দেখলেই হবে না। আমাদেরকে সামাজিক ও জাতীয় দায়বোধের দিক থেকে ভাবতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামমুখর কর্মময় জীবন ও আদর্শ থেকে দেশের তরুণ সমাজকে শিক্ষা নিতে হবে।
Remember me
Comments (0)