মুভির সবচেয়ে বাজে দিক হলো গান। টানা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত কোনো গান নেই। এই ৫৫ মিনিট আপনার মনে হবে রোলারকোস্টারে চড়ে বসেছেন। গল্পের গতি তিরতিরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ৫৫ মিনিটে একটা চমৎকার গান হবার পর থেকে, আপনি বাকি ৯৫ মিনিটে আরও ৪/৫ গানের সামনাসামনি হবেন।
এতে করে দেখা যায় ইন্টারভালের আগে ও পরে মুভির গতি কমে গেছে....
আর এই মুভির সবচেয়ে সেরা দিক হলো পাঁচটি সাব প্লটকে খুবই আকর্ষণীয় ভাবে ব্লেন্ড করে মেইন প্লটে পৌঁছে দিয়েছে। ৫টি গল্পের প্রতিটি গল্পের আলাদা গল্প, আলাদা টিউন, আলাদা গভীরতা বজায় রেখে এভাব... moreমুভির সবচেয়ে বাজে দিক হলো গান। টানা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত কোনো গান নেই। এই ৫৫ মিনিট আপনার মনে হবে রোলারকোস্টারে চড়ে বসেছেন। গল্পের গতি তিরতিরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ৫৫ মিনিটে একটা চমৎকার গান হবার পর থেকে, আপনি বাকি ৯৫ মিনিটে আরও ৪/৫ গানের সামনাসামনি হবেন।
এতে করে দেখা যায় ইন্টারভালের আগে ও পরে মুভির গতি কমে গেছে....
আর এই মুভির সবচেয়ে সেরা দিক হলো পাঁচটি সাব প্লটকে খুবই আকর্ষণীয় ভাবে ব্লেন্ড করে মেইন প্লটে পৌঁছে দিয়েছে। ৫টি গল্পের প্রতিটি গল্পের আলাদা গল্প, আলাদা টিউন, আলাদা গভীরতা বজায় রেখে এভাবে একটি বিন্দুতে পৌঁছে যাওয়া বেশ কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজের স্ক্রিণপ্লে নিজেই সাজিয়েছেন অনুরাগ বসু।
সাধারণত ট্রেন্ডিং মুভির পোস্ট আমি এড়িয়ে চলি। কিন্তু গতকাল আধো শীতের মাঝরাতে আম্মার বকুনি সত্বেও যখন বারবার খিলখিল করে হেসে উঠতে ছিলাম, সেই হাসির অনুভূতিকে তো উপেক্ষা করা যায় না।
#গল্প_নিয়ে_গল্পঃ
তো মুভির গল্প লুডুর মত। লুডু তো আমরা কমবেশি সবাই খেলেছি। আমাদের দেশ ও পার্শ্ববর্তী দেশে এই মজার খেলাটি বেশ জনপ্রিয়। তো এই লুডু খেলার মতই এই মুভিতেও চারটা ভিন্ন ভিন্ন গল্প আছে। ভিন্ন ভিন্ন চারটি গল্পের লুডুর কোটের মত ভিন্ন ভিন্ন কালার গ্রেডিং আছে।
লুডু খেলায় যখন নিজের গুটি ঘরে তুলতে হলে অন্যের ঘরের সামন দিয়ে এগিয়ে যেতে হয়, এখানেও তাইই আছে। এতে করে দেখা যায় প্রতিটি গল্প আলাদা আলাদা বাস্তবতায় হলেও তারা প্রত্যেকের সাথে কোনো না কোনো ভাবে জুড়ে ছিলো। এতে করে তাদের সাথে কথা হলেও মাঝেমাঝেই তাদের সাথে দেখা হয়ে যাচ্ছে। আবার তাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আরও তিনটি গল্পের সাথে টক্কর লেগে যাচ্ছে।
তো এই চারটি গল্পের খেলোয়ারদের সাথে আরেকটা ডিমান্ডিং বলুন বা সারপ্রাইজিং বলুন, আরও একটি গল্প জুড়ে যায়। সেই গল্পটি পরিচালক মুভির টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ইউজ করেছেন। তাই সে সেই গল্পের নায়ক যখন স্ক্রিনে এসেছেন উপভোগ্য করা গেছেন প্রতিটি সময়।
তবে ৫টি গল্পের দুটি কমন ব্যাপার ছিলো প্রেম ও টাকা।
৫টি গল্পই আপানাকে বিভিন্ন ঝামেলা দেখিয়ে শুধুমাত্র টাকার দিকেই নিয়ে যাবে।
এখানে কারও টাকার লোভ, কারও পরিস্থিতির চাহিদা, কারও আগামী জীবন সাজানোর সুযোগ নিয়ে হাজির হবে। আর টাকা যেখানে থাকবে সেখানে ক্রাইম থাকবেই।
আপনাকে টেনশন দিতে থাকবে। থ্রিল দিবে। ভাবতেও বাধ্য করাবে।
#মুভির_গল্পের_দিকঃ
খেয়াল করে দেখবেন লুডু খেলায় চারজনের চারজনই কিন্তু খেলে না। খেলে আসলে দুজন। আর দুজন থাকে সুযোগের অপেক্ষায় বা ব্যর্থতার বৃত্ত থেকেও অনেকে বের হতে পারেনা।
এই মুভিতেও দেখা যায় মুভির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে শ্রুতি ও আকাশের গল্পটি।
কিন্তু এক্সাইটিং গল্প হিসেবে হাজির হয়েছে আলু ও পিংকির গল্পটি।
আবার গল্পের গভীরতা ও সৌন্দর্য দিয়েছে বিট্টুর গল্পটি।
রাহুল ও শেজার গল্পটি লুকোনো ছিলো।
আর আর সাত্তুর গল্পটি ছিলো পুরো মুভিটিকে উপভোগ্যের সেরা অস্ত্র।
#অভিনয়ের_দিকঃ
অভিনয়ের দিকে তাকালে দুই দাঙ্গাল কন্যার মধ্যে কাকে এগিয়ে রাখবো কাকে পিছনে রাখবো এটা খুবই কঠিন কাজ। দুজনেই দুজনের সাথে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছে।
আবার পিচ্চি মেয়েটাও অসাধারণ থেকে অসাধারণ অভিনয় করেছে।
কিন্তু আমি সবার উপরে রাখবো রাজকুমার রাওকে। মিঠুনের মত বড় চুলের গেটাপ দুর্দান্ত ছিলো। মুভিতে যতখানি স্ক্রিন পেয়েছে তাতেই দুটি সিগনেচার শট রেখেছে। পিংকিকে দেখে হোটেলের পিছনে গিয়ে কান্নার দৃশ্য, বা দুঃখে নাচার দৃশ্যগুলো মনে দাগ কেটে যায়।
এরপর পংকজ ত্রিপাঠিকে রাখবো। এই লোকটা পুরো মুভির হিউমারের সেরা অস্ত্র ছিলেন। তার গেট আপ, গান গাওয়ার স্টাইল, ডায়ালগ ডেলিভারি ও টাইমিংগুলো অসাধারণ ছিলো।
তারপরেই রাখবো অভিষেক বচ্চনকে। নিজের মেয়েকে প্রথমবার দেখে যে অভিনয়ের দৃশ্যটা করেছে তা অসাধারণ ছিলো। সেও পুরো মুভিতে সেরা অভিনয় দিয়েছে।
আদিত্য রয় কাপুরের এক্টিং আমার কাছে তেমন ভালো লাগেনা। ওর ওকে জানু মুভিতে যেমন এক্টিং ছিলো এখানেও অলমোস্ট তেমনটাই এক্টিং। সো ওর অভিনয়টা আমার তেমন আকৃষ্ট হবার কথা না।
বাদবাকি আরও যারা সাপোর্টিং রোলে ছিলেন, এভেন অনুরাগ বসু নিজে ক্যামিও দিয়েছেন, সেই ক্যামিওটা অসাধারণ থেকে আরও অসাধারণ ছিলো।
#শেষকথাঃ
অনুরাগ বসু তার মুভিতে গানগুলোকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এই মুভিতে দুটি গানের থেকে বেশি আর দরকারই ছিল না। এতো গান না থাকলে মুভির গল্পটি আরও স্ট্রং হত। মাঝখানে ঝিমুনি চলে আসতো না।
এতে করে মুভিটি একটি পার্ফেক্ট মুভি বলা যেত। কিন্তু এখন মুভিটিকে বলতে হচ্ছে অলমোস্ট পার্ফেক্ট মুভি।
তো এই অলমোস্ট পার্ফেক্ট মুভির আরেকটি ভালো দিক এখনো বলিনি, তা হচ্ছে সংলাপ। এই মুভির প্রতিটি সিম্পল সংলাপগুলোও খুবই প্রাসঙ্গিক ছিলো গল্পের সাথে। চাইলে অনেকগুলো দার্শনিক সংলাপ তুলে ধরা যায়, যা ছিলো একেবারে সিম্পল। সংলাপের আরেকটি পজিটিভ দিক হলো যথেষ্ট রিফ্রেশিং হিউমার ছিলো। যা মুভিটিকে মেদহীন করেছে।