বিশ্বরাজনীতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-৪৫) একটি অতীব উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এ ঘটনার পরেই বৃহৎ শক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবির্ভাব ঘটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। তথাপি এর পূর্বে বৃহৎ শক্তি হিসেবে ছিল ফ্রান্স ও ব্রিটেন। মূলত যুদ্ধপরবর্তী কালীন এ দু’রাষ্ট্রের ভাঙ্গন ঘটতে থাকে ও অবশেষে বিশ্বরাজনীতিতে ধীরে ধীরে মাথা উঁচু করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।
এর কারণ হিসেবে তারেক শামসুর রেহমানের ‘বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর’ বইতে দেখা যায়। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ ও সামরিক খাতে ব্যয় প্রচুর অর্থ ব্যয়ই যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বরাজনীতিতে সবচেয়ে বড় মোড়ল হওয়ার সুযোগ দান করেছিল।
যাহোক পরবর্তীতে দেশটি প্রভাব বিস্তার করে সর্বত্র। তবে একটি বিষয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বলতেই হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র বাইরে বিভিন্ন নিকৃষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করলেও, সাম্রাজ্যবাদী, পুঁজিবাদী, যুদ্ধ-বিগ্রহে, অস্ত্র-শস্ত্র প্রভৃতি ক্ষেত্রে ডাকনাম হলেও এর সর্বশ্রেষ্ঠ যে বিষয়টি পরিলক্ষিত হয় তা হলো এর গণতন্ত্র চর্চা, রাষ্ট্রপতিতের ক্ষমতা গ্রহণ ও হস্তান্তর পদ্ধতি, উত্তরসূরী প্রেসিডেন্টের জন্য দিকনির্দেশনামূলক চিঠি রেখে যাওয়া (যেটি শুরু হয় জর্জ ওয়াশিংটনের আমল থেকে), জাতীয় দুর্যোগে সম্মিলিত প্রচেষ্টা সামগ্রিক বিষয় একে সমুন্নত করেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অসাধারণ কিছু রাষ্ট্রপতি, এর অভ্যন্তরীণ রীতি-নীতি ইত্যাদি যেমন বিশ্বের রাষ্ট্রের মানুষদের নজর কেড়েছে ঠিক তেমনি এর দীর্ঘদিনের ইতিহাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।
nagad
ফলপ্রসূ যুক্তরাষ্ট্র আর্তজাতিক অঙ্গনে একটি রোল মডেল হিসেবে সুপরিচিত হয়েছে। তদুপরি, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা ঘটেছে গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থক উগ্রবাদীদের সহিংসতামূলক হামলায় এবং তা গত ৩ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যা রাষ্ট্রটির অভ্যন্তরীণ সৃষ্টি করেছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।
কালো ক্ষত দাগ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মুখে। ক্ষুণ্ন্ন করেছে ১৫০-২০০ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাস। আর যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এই গড়িমসি,? তিনি আর কেউ নন। তিনি হলেন গত চার বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ৪৫তম সাবেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! যিনি ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতার মসনদে বসেন ও ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা থেকে অব্যাহত হন।
মূলত ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় মেইক আমেরিকা গ্রেট স্লোগানে যুক্তরাষ্ট্র মুখরিত করলেও ক্ষমতা শেষে মার্কিন ইতিহাসকে পঙ্গু ও কলঙ্ক করে গিয়েছেন। বিশেষ করে তার ৪ বছরের কিছু উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড ও আগ্রাসী নীতি বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মান ক্ষুণ্ন করতে যেমন তত্পর ছিল, তেমনি বড্ড পরিকর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ধ্বংসাত্মক কাণ্ড ঘটাতে।
তদুপরি ধনকুবের ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক অঙ্গনে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের উদাসীনতার ফলপ্রসূ মৃত্যু ঘটেছে প্রায় ৪০ লাখ। এতে দেশটির অর্থনীতি অনেকটাই ভঙ্গুর হয়ে যায়। বেকারত্ব সৃষ্টি হয় ১০ শতাংশের বেশি। এছাড়া ‘শ্বেতাঙ্গরা শ্রেষ্ঠ’ নীতি কায়েম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনেকটাই অস্থিতিশীল করে তোলেন ট্রাম্প।
যেটির বহিঃপ্রকাশ মূলত ২৫ মে ২০২০ ইং, কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশি দ্বারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করার মাধ্যমে তীব্র দানা বেঁধে ওঠে আমেরিকাব্যাপী। ১৯৬০ সালে মার্কিন লুথার কিং দারিদ্র্য ও বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, ‘ট্রাম্প’ তার সবকিছুই পিছনে ফেলে যায়।
এ ছাড়া বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেকেলে গুরুত্বপূর্ণ বা ঐতিহ্যবাহী প্রভাব ক্ষুণ্ন করতে সাহায্য করে তা হলো ট্রাম্পের অভিশংসন বা ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম ব্যক্তি যিনি কিনা পরপর দু’বার অভিশংসিত হন।
ডিসেম্বর ২০১৯ এ জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চাপ দেয়ায় ১ম বারের ন্যায় অভিশংসিত হন ও জানুয়ারি ২০২১ এ ২য় দফায় অভিশংসিত হন ক্যাপিটল হিলের আক্রমণে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ায়। তবে সিনেট দ্বারা অভিশংসিত নাও হতে পারে ট্রাম্প।
ফলপ্রসূ ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। পক্ষান্তরে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের নজিরবিহীন যে ঘটনা ৬ জানুয়ারিতে ঘটেছে তাতে মনে হয়, ‘ট্রাম্পইজম’ ২০২৪ এ আবার ট্রাম্পকে জয়ী করবে। কারণ এর সঙ্গে স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে আমেরিকার ৭০ ভাগ শ্বেতাঙ্গদের ও সেখানকার ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্ সকল প্রকার ব্যবসায়ীর।
পক্ষান্তরে ১৯৬৯ সালে অ্যান্ডু জনসনের পর থেকে এই প্রথম কোনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) তার উত্তরসূরির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত থাকলেন। এ ছাড়া ২০১৭-তে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু চুক্তি প্যারিস ক্লাইমেট অ্যাক্ট চুক্তি থেকে প্রত্যাহার, কঠোর সমালোচনার মুখে মেক্সিকোতে সীমান্তে লোহার প্রাচীর নির্মাণে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উত্তেজনা থেকে শুরু করে মিথ্যা, ভুল ও বানোয়াট তথ্য প্রচার, মধ্যপ্রাচ্যে (বিশেষ করে ইরানে) সংকট ও চাপ সৃষ্টি, ২০১৮-তে ইরানের পরমাণু ইস্যুতে ৬ জাতির গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি থেকে প্রত্যাহার, চীন আগ্রাসী ও বানিজ্যযুদ্ধ, অভিবাসীদের উপর নৈমিত্তিক চাপ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার, বিচার বিভাগে নিজস্ব ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রভৃতি কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য, রাষ্ট্রটির অভ্যন্তরীণ ও বহিঃনীতির সেকেলে ঐতিহ্য ক্ষুণ্ন করেছে মার্কিন ধনকুবের সাবেক ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যা কিনা খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণে ও বিশ্বমঞ্চে যেমন বিরুপ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, ঠিক তেমনি জন্ম দিয়েছে কঠোর আলোচনা- সমালোচনা, ব্লাক লাইভস্ ম্যাটার আন্দোলন, গণতন্ত্রের দেয়াল খ্যাত ক্যাপিটল হিলে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সাধন। সৃষ্টি করছে দাঙ্গা, ৫ জন মানুষের মৃত্যু ও ১০০ এর অধিক আহত।
মূলত ট্রাম্পের ব্যবসায়িক কেন্দ্রিক মনোভাব, পুঁজিবাদী কর্ম, সাম্রাজ্য বিধি নীতি একদিকে যেমন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদকে উস্কানি দিচ্ছিল, অন্যদিকে তেমনি মার্কিন সমাজকে দ্বিধাবিভক্ত ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল। ফলপ্রসূ কৃষ্ণাঙ্গরা শিকার হচ্ছিল অবহেলা ও নৃশংসতার। গত ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ইং, যেন সবচেয়ে বড় বর্ণবাদ বৈষম্য ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় চিকিত্সা না পেয়ে মারা যান করোনা আক্রান্ত একজন মুমূর্ষু ডাক্তার। পরন্তু সৃষ্টি হয় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণে বড় ভাঙ্গন।
ক্ষুণ্ন হয় বিশ্বরাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসাধারণ সব সেকেলে গঠিত গণতন্ত্রের সৌন্দর্য ও ভাবমূর্তির ঐতিহ্য। অন্যদিকে এখন নয়া ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিকট বড় চ্যালেঞ্জই হচ্ছে যেন, বিশ্বরাজনীতিতে মার্কিন ইতিহাস ও ঐতিহ্য অম্লান রাখা, ট্রাম্পের কুকর্ম থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বাঁচানো, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সেকেলে যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করেছিল তা একালে এসে সাজানো, গোছানো ও সংস্কার সাধন করা।
বিশেষ করে পরমাণু চুক্তিতে যে প্রত্যাহার করেছিল, তাতে ফেরত যাওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গরমাগরম তাণ্ডব, সহিংসতা ও জনমনে ক্ষোভ হ্রাস করা। এছাড়া ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনর্গঠন করা। কেননা ব্রিটেন ভিত্তিক সিবিআরের পরিসংখ্যান বলছে, কোভিড-১৯ কালে যুক্তরাষ্ট্রে মহামারীর কারণে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমতে পারে।
তারপর কমতে পারে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। যা মূলত অতি শঙ্কার বিষয়! আর পরিসংখ্যানে এটাও উল্লেখ করা হয় যে, এর ফলপ্রসূ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শীর্ষ অবস্থান দখল করবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈপরীতে চীন। তদুপরি এসব বিষয় নিয়েও বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। পাশাপাশি, ট্রাম্প বিচার বিভাগে তার নিকটাত্মীয় নিয়োগ দিয়ে যে, তুমুল কাণ্ড ঘটিয়েছে তা নিরসন বা সংস্কার করতেও বাইডেনকে ব্যাপক কাঠ কয়লা পোড়াতে হতে পারে।
বিশেষ করে অভিবাসীদের কেন্দ্র করে ট্রাম্প যে, আগ্রাসীমূলক নীতি গ্রহণ করেছিল তার সংশোধন করা। ইতিমধ্যে জো বাইডেন, ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দিবেন বলেছেন। তথাপি তার আরো চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ঐক্য গঠিত করা দেশটির ভিতরে ও বাইরে। প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র নীতি ক্ষেত্রে সংস্কার করা।
অভ্যন্তরীণ উগ্র জাতীয়তাবাদী রোধ, বর্ণবাদককে ঘিরে চিরতরে সহিংসতা রোধ ইত্যাদি। তদুপরি বাইডেন ইতোমধ্যে বেশ কয়েটি নির্বাহী অধ্যাদেশ জারি করেছেন। যেখানে প্রথম সারির বিষয়ে রয়েছে কোভিড-১৯ মোকাবিলা প্রসঙ্গে। পরন্তু তিনি ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বড় বাজেটও ধরেছেন এক্ষেত্রে। এছাড়া দ্বিতীয় সারিগুলোতে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনে প্যারিস ক্লাইমেট চুক্তিতে ফেরা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগদান, ৭ মুসলিম দেশের উপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার উল্লেখযোগ্য।
প্রসঙ্গত, বাইডেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ধনাঢ্য ব্যবসায়ী নন, তিনি একজন পাকাপোক্ত রাজনীতিবিদ। এর আগে দু’দফায় ওবামার আমলে ভাইস-প্রেসিডেন্টও ছিলেন। মাত্র ২৯ বছর বয়সে প্রথম সিনেটর হন। সবমিলিয়ে ‘পাউয়ার কামস্ উইথ রেসপন্সিবিলিটি’ অর্থাত্ ক্ষমতার সঙ্গে দায়িত্বও আসে। সেজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের যে গৌরবান্বিত ইতিহাস তা ভঙ্গুর করেছে ধনকুবের ট্রাম্প। রেখে গিয়েছে তার ‘ট্রাম্পইজম’।
এর সঙ্গে দেশটির অর্ধেক মানুষের ভোট পেয়েছে ট্রাম্প। যাদেরকে মূলত উগ্রবাদী করেছে সে। গণতন্ত্র ধ্বংসসহ সহিংসতা সৃষ্টি করে গিয়েছে। যা এখনো বিরাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মধ্যে রয়েছে স্ফূলিঙ্গের ন্যায়। সুতরাং এই জন্যই বাইডেন বারবার বলছেন, ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা চাই! ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা চাই! কেননা এটি ছাড়া তার সুসংগঠিত রাষ্ট্র পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
সর্বোপরি এখন যুক্তরাষ্ট্রের নয়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের চ্যালেঞ্জ ব্যাপক। তন্মধ্যে এই ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে শক্ত করা থেকে শুরু করে জনমনে আতঙ্ক দূর করা, শহরগুলোতে সহিংসতা নিরসন করা, ইউরোপ, মধ্যেপ্রাচ্যে ও দক্ষিণ এশিয়ায় মৈত্রী স্থাপন ও সঠিক পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ প্রভৃতি। ইতোমধ্যে কানাডা, মেক্সিকো, ইংল্যান্ডের প্রাধানদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। এ ছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন রাষ্ট্র (ভেনিজুয়েলা, সৌদি আরব, ইরান, রাশিয়া, ভারত, চীন) বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঁতাত করার চেষ্টায় ব্যস্ত আছেন।
সুতরাং তাদের সামাল দেয়াও বাইডেনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র রাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে বাইডেন কেমন নীতি গ্রহণ করবেন সেটিও বড় চ্যালেঞ্জ? কেননা এর পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইসরাইলের ভালো ধরনের যোগসূত্র ছিল। তবে মার্কিন সমাজের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরাইলের সঙ্গে আঁতাত ঠিক রেখে বাইডেন ফিলিস্তিনের সঙ্গে স্থিতিশীল অবস্থানে থাকবেন। সবমিলিয়ে বলা চলে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের রীতিনীতি ঠিক করার পূর্বে বাইডেন ঘরোয়া রাজনীতির ভিত্তি মজবুত করতে চেষ্টা করবেন। কেননা উত্তরসূরী প্রেসিডেন্টের আমলে সেখানে অনেকটাই ভাঙ্গন ধরেছে।
এ ছাড়া ট্রাম্পের অব্যাহতির পর সাদা আমেরিকানরা দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং আফিওড সম্পর্কিত দিশেহারা ও হতাশায় পড়ে গেছে। বাইডেনকে অবশ্যই সুবিধাবঞ্চিত সংখ্যালঘুদেরসহ এই সাদাদের অংশগুলিতে সহায়তা করতে হবে। অন্যথায়, ট্রাম্প বা একটি ক্লোন হোয়াইট হাউসে ফিরে আসতে পারে ২০২৫ সালে।
পরন্তু, টাইমস্ অফ ইন্ডিয়া?ও সেই একই ভাষ্য দিয়েছেন। পরিশেষে এখন ধনকুবের ট্রাম্প গঠিত দ্বিধাবিভক্তি মার্কিন সমাজকে একত্রীকরণই বর্তমান ৪৬তম নয়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান চ্যালেঞ্জ। পরন্তু গণতন্ত্রের রোল মডেল হিসেবে খ্যাত রাষ্ট্র ‘যুক্তরাষ্ট্রের’ নয়া প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উত্থান এর মধ্যে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বরাজনীতিতে সুদিন ফিরে আসুক’ এটিই এখন প্রত্যাশা।
Comments (0)