করোনাভাইরাসের এক বছরে বিশ্বজুড়ে সব খাতেই এর নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট। ক্ষতির সম্মুখিন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। এর মধ্যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষতি ও তীব্র সংকটে কর্মজীবী মানুষ। চাকরি হারানো, কর্মঘণ্টা কমে যাওয়াসহ বিভিন্নভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমজীবীরা। এমন অবস্থায় চলতি বছর করোনার প্রভাবে কর্মসংস্থানের সংকটের চিত্র তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, আইএলও। সংস্থাটি সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে বিশ্ব কর্মসংস্থানের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে। জাতিসংঘের এ অঙ্গ সংস্থাটি জানায়, ১৯৩০ সালের পর থেকে বর্তমানে করোনায় সর্বোচ্চ সংকটে রয়েছে বিশ্ব শ্রম বাজার। যদিও এই সংকট কবে কেটে যাবে তা অনিশ্চিত হলেও আশার বাণী কিছুটা রয়েছে করোনা ভ্যাকসিনে। জাতিসংঘ মনে করে, করোনার টিকা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ হলে কর্মঘণ্টা আবারো বাড়বে, ফিরবে কর্মচঞ্চলতা।
এইএলও জানায়, অভূতপূর্ব এ দুর্যোগে ২০২০ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রায় ২২৫ মিলিয়ন পূর্ণ কর্মঘণ্টার চাকরির বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৮ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মঘণ্টা হারিয়েছেন শ্রমজীবীরা। বিশ্ব কর্মঘণ্টা ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২১ সালে এসে ৩ শতাংশ কমেছে। যা প্রায় ৯০ মিলিয়ন পূর্ণ ঘণ্টার চাকরির সমান। করোনা ভ্যাকসিন বিশ্বজুড়ে বণ্টনে ধীর গতি ও দেশগুলোর সরকার কর্তৃক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভ্যাকসিন সরবরাহ না করলে এই সংকট বা মন্দা অবস্থা আরো বাড়ার আশঙ্কা করছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে আইএলওর মহাপরিাচলক গে রাইডার বলেন, করোনা ভ্যাকসিন বণ্টনের যে অবস্থা তা বিশ্ব অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরে আনার বিষয়ে অনেকটাই উদাসীন মনে করছি আমরা। অনেকটা অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে সব কিছু। এমন অবস্থায় আমাদের মনে রাখা উচিত, কোন দেশ বা গ্রুপ এককভাবে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে না।
আইএলওর রিপোর্টে আরো বলা হয়, ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে কর্মসংস্থান কমে গেছে প্রায় ১১৪ মিলিয়ন। সে হিসাবে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৩ মিলিয়ন মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এমনকি যারা কর্মহীনভাবে সময় পার করছেন তারা মানসিক ও শারীরিকভাবে কর্মশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় এমন কর্মঘণ্টা হারানোর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার আয় কমেছে। যা পুরো অর্থনীতির ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বলেও জানান আইএলও মহাপরিচালক।
Comments (0)