অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ

 
 
২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে বলেই মনে করে জাতিসংঘ। এ বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
 
#জাতিসংঘের_প্রতিবেদন
 
1) ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মাথাপিছু জিডিপি প্রায় ১০ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে।
 
2) নারী, শিশু, বস্তিবাসী, অভিবাসী শ্রমিক ও বয়স্ক মানুষেরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
 
কোভিডের ধাক্কা এখনো চলছে। ২০২১ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি অনেকটা ঘুরে দাঁড়াবে, এমন কথা অনেকেই বলছে। তবে টিকাদান কর্মসূচির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে জাতিসংঘের হিসাবমতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। এদিকে সরকারি ভাষ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ বলা হলেও এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
 
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে, এমন কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
 
২০২০ সালকে পেছনে ফেলে এসে ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে বলেই মনে করে জাতিসংঘ। তারা বলছে, এ বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৪ শতাংশ এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। পরের বছর বা ২০২২ সালে তা দাঁড়াবে যথাক্রমে ২ দশমিক ৫ ও ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সিচুয়েশন প্রসপেক্টাস বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা শীর্ষক জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস করা হয়েছে।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর মতো সংকট শত বছরে একবারই আসে। গত বছরের শুরুতে পুরো বিশ্বকে ভয়াবহ অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরেছিল। বাণিজ্য ও পর্যটন একরকম থমকে গিয়েছিল। চাকরি হারানো এবং উৎপাদন হ্রাস অভূতপূর্ব পর্যায়ে চলে যায়। সবচেয়ে সংকটে পড়ে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো। আয় ও সম্পদ অসমতা নতুন উচ্চতায় চলে যায়। এর ধাক্কায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকোচনের হার দাঁড়ায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। সেই ১৯৩০-এর দশকের মহামন্দার পর আর কখনো এতটা সংকোচন হয়নি।
 
প্রতিবেদনে বিভিন্ন অঞ্চল সম্পর্কে পৃথক প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, যেসব অঞ্চল কোভিডের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া অন্যতম। ফলে এসডিজি বা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে এই অঞ্চলের দেশগুলো যে অগ্রগতি অর্জন করেছিল, সেখান থেকে অনেকটাই পিছিয়ে গেছে তারা। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মাথাপিছু জিডিপি প্রায় ১০ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে। নারী, শিশু, বস্তিবাসী, অভিবাসী শ্রমিক ও বয়স্ক মানুষেরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
 
#দক্ষিণ_এশিয়া
২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। জাতিসংঘ বলছে, এটা যথেষ্ট নয়। ২০২২ সালের পূর্বাভাস হচ্ছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষে দক্ষিণ এশিয়া শেষমেশ প্রাক্-মহামারি পর্যায় অতিক্রম করতে পারবে। তবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বিশ্ববাণিজ্যের সঙ্গে অধিকতর সম্পৃক্ততার জন্য বাংলাদেশ এবং পর্যটনের কারণে মালদ্বীপ ও নেপালের প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বেশি হবে।
 
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করতে দ্রুততার সঙ্গে অর্থনীতির বহুমুখীকরণ ঘটাতে হবে। পাশাপাশি মহামারিজনিত সংকটের কারণে বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনেও পরিবর্তন আসছে। বিষয়টি হচ্ছে, উন্নত দেশগুলো এখন উৎপাদনশীল কারখানা নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাতে অনেকেই আর সাবকন্ট্রাক্টে কাজ করাবে না। সে কারণে রপ্তানিমুখী দেশগুলোকে এখন অর্থনীতির বহুমুখীকরণ ঘটাতে হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বৈচিত্র্য অনেক কম। বাংলাদেশের রপ্তানি এককভাবে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। কোভিডের মতো ধাক্কা এলে এসব আর ধোপে টেকে না। সে জন্য জাতিসংঘের পরামর্শ হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার সরকারগুলোর উচিত হচ্ছে, আরও বেশি মূল্য সংযোজন করে এবং উচ্চ দক্ষতার প্রয়োজন হয়, এমন খাতে বেশি বেশি বিনিয়োগ করা। বাহ্যিক ধাক্কা সামলানোর মতো সক্ষমতা অর্জন করাই হবে এখন প্রধান অগ্রাধিকার।
 
শ্রমবাজারকে আনুষ্ঠানিক বাতাবরণে নিয়ে আসার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের ৮০ শতাংশের বেশি শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন।
 
#দারিদ্র্য_বৃদ্ধি
তবে কোভিডের কারণে দারিদ্র্য বাড়ছে। ভারতীয় অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর টুইট অনুসারে, অধিকাংশ উন্নয়নশীল ও উদীয়মান দেশগুলোতে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ভারতে। এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দরিদ্র মানুষের বসবাস নাইজেরিয়ায়। শিগগিরই ভারত তাকে ছাড়িয়ে যাবে।
Posted in News Blogs on January 27 2021 at 05:41 PM

Comments (0)

No login
color_lens
gif