আসুন জানি ইলুমিনাতি সম্পর্কে
ইলুমিনাতি (Illuminati)-কারা এবং তাদের উদ্যেশ্য কী?
নতুন শব্দের সাথে পরিচয়! (ইলুমিনাতি)! কত ভয়ানক! স্টাইল নয় এটি একটি সাইন (si
Illuminati যার আভিধানিক অর্থ প্রদীপ্ত বা উদ্ভাসিত করা। আদতে খুব সাধারণ একটা শব্দ মনে হয়। কিন্তু এই সাধারণ শব্দটাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে খুব অসাধারণ কিন্তু অত্যন্ত ভয়ংকর এজেন্ডা। যুগ যুগ ধরেই ইহুদি-খ্রিষ্টানরা ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার যে মিশন চালিয়ে আসছে তার মধ্যে অন্যতম হল 'ইলুমিনাতি' এবং 'সেটানিজম'। ইলুমিনাতি শব্দের ব্যাপক অর্থ "যারা কোনো বিষয়ে বিশেষ ভাবে আলোকিত বা জ্ঞানার্জনের দাবী করে" অথবা "ধর্মীয় বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান সম্পন্ন কোনো দল"। অর্থাৎ শয়তানের সাথে নিজের আত্মার বিনিময়ে করা চুক্তি যার ফলে সে এই জীবনে যা চায় চাই পায়, কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পরে মৃত্যুবরণ করে আর মৃত্যুর পর তার আত্মা শয়তানের অধীনে চলে যায়। এরা একটি সিক্রেট গ্রুপের মাধ্যমে তাদের এই এজেন্ডা পরিচালনা করে। এই গুপ্ত সংগঠনের নাম 'দ্য ইলুমিনাতি'। এর প্রতীক হচ্ছে এক চোখ বিশিষ্ট একটি পিরামিড সদৃশ ত্রিভুজ। আমরা জানি যে, রাসূল (সা আমাদের যে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করে গিয়েছিলেন তার চিহ্ন এক চোখ। চোখের রঙ হবে হালকা সবুজ রঙের সীসার মত। ১৭৭৬ সালের ১ মে ব্যাভারিয়াতে অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট এই সংগঠন টি প্রতিষ্ঠা করে।
অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট একজন জেসুইট ছিল। পরে ব্যাভারিয়ার ইংগোল্স্তাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে খ্রিষ্টান ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়। কিন্তু পরবর্তীকালে তার হাতেই গড়ে উঠে এই ইলুমিনাতি। অনেকেই ধারণা করে থাকে যে ইলুমিনাতির সৃষ্টির পিছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে ফ্রিম্যাসন্স রা। ক্যাথলিক খ্রিষ্টান দের চোখে ইলুমিনাতিরা ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে পরিগণিত হয়। অনেকের মতে এরা নতুন বিশ্ব ব্যাবস্থাগড়ে তোলার নীল নকশা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ড্যান ব্রাউন রচিত এঞ্জেল্স অ্যান্ড ডিমন্স উপন্যাস প্রকাশের ফলে এই সংগঠনটি আধুনিক কালে আবার আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়।
এরা মূলত ‘বাপহমেট’ নামক শয়তানকে পূজা করে। তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে তারা কাউকে ভয় পেতে মানা করে। অর্থাৎ কোন কিছুতে কোন বাঁধা নেই সেটা যদি অনাচারও হয়। তারা চায় এসবই হোক। কারণ এতে সভ্যতা খুব দ্রুত ধ্বংস হবে। যার ফলে তারা মানুষকে বশে আনবে। এই গ্রুপটি তাদের প্রভুর(শয়তানের) নিকট হতে নির্দেশনা পান। যারা ইলুমিনাতি করে তদের ধারনা সৃষ্টিকর্তা/আল্লাহ/গড/ঈশ্বর শয়তানকে জান্নাত থেকে বের করে শয়তান এর উপর যুলুম করেছেন (তাদের ভাষায় লুসিফার)। কাজেই শয়তানের পক্ষাবলম্বন করা উচিৎ। সব ধরনের শয়তানী কাজকে প্রোমোট করা উচিৎ।
এবং তারা এটাও মনে করে যে তারা যত শয়তানের পুজা করবে শয়তান তত শক্তিশালী হবে এবং সৃষ্টিকর্তার মতন শক্তিশালি হয়ে যাবে এবং সে সৃষ্টিকর্তার সাথে যুদ্ধ করবে। ( আল্লাহ মাফ করুক)। তারা মানুষকে বশে আনার জন্য এমন ভাবে প্রচার করে যাতে মানুষ খুব সহজেই কাবু হয়ে যায়। অর্থাৎ এদের মূল উদ্দেশ্য হল " ওয়ান অর্ডার ওয়ার্ল্ড "মানে "এক বিশ্ব এক শাসন"। যারা তাদের এই এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাদের বিরুদ্ধে কৌশলে অভিযোগ এনে যুদ্ধ-গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়। (এবার চোখের সামনে আফগানিস্তান, সিরিয়া,ইরাক,ফিলিস্তিনের ছবি নিয়ে আসুন)
এদের প্রধান প্রচার প্ল্যানিং হল গুপ্ত বার্তার মাধ্যমে হিপনোটাইজ করা। একটি পেরেক যেমন ধীরে ধীরে আঘাত করতে করতে দেয়ালে গেঁথে যায়, ঠিক হিডেন মেসেজ বা গুপ্ত বার্তা প্রদানের মাধ্যমে তারা এভাবে ইলুমিনাতির প্রতি মানুষকে আহ্বান করে। আর মানুষ অনেক সময় নিজের অজান্তেই এর ফাঁদে জড়িয়ে পরে। এরা বিশেষ অঙ্গভঙ্গি, বার্তা এবং চিহ্নের মাধ্যমে বেশি প্রচার করে। কার্টুন বা এনিমেশন, মুভি, গান, বই, সঙ্গীত এমনকি সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন বিনোদনমূলক চ্যানেলকেও তারা ব্যবহার করে। বাচ্চাদের জনপ্রিয় সব কার্টুন যেমন- বেন 10,পাওয়ার রেঞ্জার্স, Teen Titans,Gumble World,Tom & Jerry,Micky mouse সব কার্টুনই ইলুমিনাতি সম্পর্কিত। এইসব কার্টুনগুলোর বেশিরভাগ চরিত্রই এক চোখ বিশিষ্ট। যাদের প্রত্যেকের কিছু না কিছু সুপার পাওয়ার আছে। অর্থাৎ তারা একেকজন একেক বিষয়ে পাওয়ারফুল। শুধু কি বাচ্চাদেরকেই টার্গেট করা হয়েছে ভাবছেন? না আমরা বড়রাও তাদের এজেন্ডার টার্গেট। বিশ্বের বড় বড় সব সেলিব্রিটি যাদের আমরা আমাদের আইডল মনে করি তারাও প্রত্যেকে ইলুমিনাতির সদস্য। ম্যাডোনা,মাইকেল জ্যাকশন,নেইমার,মেসিসহ সব বিখ্যাত তারকারা তাদের সাইন হিসেবে এক চোখ বিশিষ্ট ইলুমিনাতি প্রতীক ব্যবহার করে ট্যাটু আকারে।(ইউটিউব সার্চ করে দেখতে পারেন)।
এবার আপনাদের ইলুমিনাতির কিছু উদাহরণ দেই।
প্রথমেই আসি আমাদের বহুল ব্যবহৃত শব্দ 'LOL' নিয়ে। LOL শব্দটা আমাদের ফেসবুক বাসির জন্য জনপ্রিয়
ও চেনা একটি শব্দ। অনেকে এর ব্যবহার lots of love অথবা laugh out loud হিসেবে ব্যবহার করেন।আবার অনেকেই না জেনেই LOL ব্যবহার করেন। কিন্তু আপনারা কি আসলেও জানেন LOL এর পূর্নরূপ কি অথবা এর উত্থাপন কোথা থেকে???
LOL এর সত্যিকারের পূর্নরূপ হচ্ছে " Lucifer's Our Lord "এর মানে দাঁড়াচ্ছে,"শয়তান আমাদের ঈশ্বর।"(নাউজুবিল্লাহ) না জেনেই প্রতিনিয়ত কত শিরক করে ফেলছি। (আল্লাহুম্মাগফিরলী)
Lol এর আসল অর্থ কী??...এই লিংকে গিয়ে প্রমাণ পাবেন
এবার দ্বিতীয় উদাহরণ একটা সাইন। (৩নাম্বার ছবি) খুব জনপ্রিয় একটি স্টাইল বর্তমান প্রজন্মের কাছে। এটি একটি নৃত্যভঙ্গি যাকে বলা হয় DAB সাইন। Davils are bright (শয়তানেরা চির উজ্জ্বল)। (নাউজুবিল্লাহ)
দ্য ইলুমিনাতি তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য অনেক রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষমতার মসনদে বসিয়েছে। ধারণা করা হয়, অনেক প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় এসেছেন ইলুমিনাতির সহায়তাই। আর ইলুমিনাতি তাদের পুতুলের মত ব্যবহার করে। এও ধারণা করা হয়, অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও কর্মকাণ্ডের পিছনে এর হাত রয়েছে। প্রত্যেকটা দুনিয়া কব্জা করা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ইলুমিনাতির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। যেখানেই দেখবেন এক চোখ বুঝে নিবেন এটাই ইলুমিনাতি। একসময়ের জনপ্রিয় কার্টুন সিম্পসন এ ২০০২ সালের এক পর্বে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার ভবিষৎবাণী করা হয়েছিল। অত:পর ফলাফল আমাদের চোখের সামনে। (ইউটিউবে দেখতে পারেন)। তাহলে এখনকার কার্টুনগুলোতে যে সুপার পাওয়ার দেখানো হয় সেগুলোর বাস্তবায়ন কি আপনাদের কাছে অসম্ভব মনে হয়???
সেলিব্রিটি,কার্টুন, মিডিয়া,বিশ্বনেতাদের মাধ্যমে অত্যন্ত সুকৌশলে মাইন্ড কন্ট্রোল করা হচ্ছে মুসলমানদের। দাজ্জালের ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক ব্যাপার হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যাতে দাজ্জাল সামনে এলেও আমরা বুঝতে না পারি! সতর্ক হবার সুযোগ না পাই। কত সুক্ষকৌশলে আমাদের ইসলামহীন করা হচ্ছে!! একবারও ভেবে দেখেছি আমরা??? সুতরাং মুসলিম ভাই-বোনেরা, অন্ধের মত ওয়েস্টার্ন কালচার,স্টাইল,ফ্যাশন অনুসরণ করার আগে একবার চিন্তা করে দেখবেন যে 'কি করছেন?' পদে পদে কিভাবে মুসলিম সত্তাকে বিসর্জন দিচ্ছেন। কার সাথে শিরক করছেন?? যেই পরাক্রমশালী রবের কাছেই ফিরে যেতে হবে তার সাথে?? এরপরও যদি আপনি সতর্ক না হোন তবে আর কবে? কিভাবে??দাজ্জাল আসছে আর আমরা বেখবর.....!!
Comments (0)