গুগল সম্পর্কে যে ১০টি তথ্য হয়তো আপনার জানা নেই

গুগল আসার আগের জীবনের কথা কি আপনি মনে করতে পারেন? তখন আপনি কি করতেন, যখন হঠাৎ করে, তাড়াতাড়ি কোন বিষয়ে তথ্য খুঁজে বের করার দরকার হতো?

যা কিছুই আপনি খোঁজেন না কেন- হয়তো একটি শব্দের সঠিক বানান, একটি রেস্তোরার ঠিকানা, বিশেষ কোন দোকান, অথবা পাহাড়ি কোন হৃদের নাম, সব কিছুর জন্যই হয়তো আপনি এখন গুগল করেন।

গুগল প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ৪০ হাজার অনুসন্ধানের জবাব বের করে- প্রতিদিন যার মানে সাড়ে তিন বিলিয়ন অনুসন্ধান (ফোর্বসের হিসাব)।

এতসব কিছুর মাঝে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই সার্চ ইঞ্জিন শুধুমাত্র কোন সার্চ ইঞ্জিনের চেয়েও বেশি কিছু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা একটা বিজ্ঞাপনী মাধ্যম, একটি ব্যবসা মডেল আর ব্যক্তিগত তথ্যের এক নিরলস সংগ্রাহক।

ঠিক তাই, প্রত্যেকবার যখন আমরা গুগলে কোন অনুসন্ধান করি, গুগল আমাদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ এবং অভ্যাস সম্পর্কে খানিকটা জেনে ফেলে- কিন্তু আপনি গুগল সম্পর্কে কতটা জানেন?

এখানে গুগল সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য রয়েছে, যা হয়তো আপনাকে অবাক করে দিতে পারে।

১. নাম

 
 

বানান ভুল থেকেই গুগলের নামের উৎপত্তি?                                বানান ভুল থেকেই গুগলের নামের উৎপত্তি?

 

গুগল নামের মানে কি, আপনি জানতে চাইতে পারে। আসলে এর কোন মানেই নেই।

গুগল নামটি আসলে এসেছে গাণিতিক হিসাবের গোগল (googol) ভুল করে লেখার মাধ্যমে-যার হলো ১ এর পর একশোটি শূন্য।

এ নিয়ে এখন অনেক গল্প প্রচলিত আছে যে, একজন প্রকৌশলী বা ছাত্র আসল নামের বদলে এই ভুল বানানটি লিখেছিলেন। সেই ভুল নামই পুরো দুনিয়ার সামনে চলে আসে।

এর পরের ঘটনা তো ইতিহাস।

২. 'ব্যাকরাব'

গুগলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম নাম দিয়েছিলেন ব্যাকরাব।

যে পদ্ধতিতে একটি ওয়েবসাইট আরেকটি ওয়েবসাইটকে খুঁজে বের করে এবং সেগুলোর অতীত লিংকের ওপর নির্ভর করে ওয়েবপেইজে র‍্যাংকিং নির্ধারণ করে, তাকেই বলা হয় ব্যাকরাব।

৩. সব কিছুই হিসাব নিকাশ নয়

গুগলের সব কিছুই ব্যবসা নয়। সেখানে অনেক মজার ব্যাপারসাপারও আছে
 

গুগলের সব কিছুই ব্যবসা নয়। সেখানে অনেক মজার ব্যাপারসাপারও আছে

 

গুগলের সব কিছুই ব্যবসা নয়। সেখানে অনেক মজার ব্যাপারসাপারও আছে।

যেমন "askew" এই শব্দটি গুগলে লিখে দেখতে পারেন।

৪.গুগলের ছাগল

গুগলের এলাকায় ঘাস একটু বেশি সবুজ
 

গুগল সবসময়েই বলে, তারা সবুজ উদ্যোগ সমর্থন করে। এরই একটি হলো ছাগলের মাধ্যমে লনের ঘাসকাটা।

ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগল সদর দপ্তরের লনের ঘাসগুলো নিয়মিতভাবে কেটেছেটে ঠিকঠাক রাখতে হয়। সুতরাং আপনি যদি কখনো সেখানে যান, দেখতে পাবেন প্রায় ২০০ ছাগল সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ঘাস খেয়ে লনের ঘাস ঠিকঠাক রাখছে।

৫. ক্রমবর্ধমান ব্যবসা

আপনি কি জানেন, আপনার সামাজিক মাধ্যমটির মালিক আসলে কে?
 

জিমেইল, গুগল ম্যাপস, গুগল ড্রাইভ, গুগল ক্রোম...এসবের বাইরে ২০১০ সাল থেকে গুগল প্রায় প্রতি সপ্তাহেই একটি করে কোম্পানির মালিক হচ্ছে।

আপনি হয়তো টের পাবেন না, কিন্তু অ্যান্ড্রুয়েড,ইউটিউব, ওয়ায, অ্যাডসেন্স-এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক গুগল, এরকম আরো সত্তুরটি কোম্পানি রয়েছে।

৬. ডুডল

বিশেষ বিশেষ দিন বা ব্যক্তিত্বের উপলক্ষে বিশেষভাবে করা শিল্প গুগলের চেহারায় ভেসে ওঠে
 

অফিসের বাইরে বার্তা যোগাযোগের মাধ্যমে প্রথম গুগল ডুডল চালু হয় ১৯৯৮ সালের ৩০ অগাস্ট।

যখন ল্যারি আর সের্গেই একটি উৎসবে নেভাদা গিয়েছিলেন, তখনি প্রথম এই আইডিয়াটি আসে।

এরপর থেকেই ডুডল গুগলের একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়। বিশেষ বিশেষ দিন বা ব্যক্তিত্বের উপলক্ষে বিশেষভাবে করা শিল্প গুগলের চেহারায় ভেসে ওঠে।

৭. অনেকের জন্য সুযোগের হাতছাড়া, কিন্তু গুগলের জন্য নয়

প্রযুক্তি বাজারের বড় একটি অংশ গুগলের দখলে
 

প্রযুক্তি বাজারের বড় একটি অংশ গুগলের দখলে

 

১৯৯৯ সালে ল্যারি এবং সের্গেই গুগলকে ১ মিলিয়ন ডলারে বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন.....কিন্তু সেটা কেনার মতো কোন গ্রাহক ছিল না। এমনকি দাম কমিয়ে দেয়ার পরেও কোন গ্রাহক মেলেনি।

এখন গুগলের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ডলার। হয়তো কেউ কেউ সেই সুযোগ হাতছাড়া করার জন্য এখন আফসোস করতে পারে।

৮.গুগলের আদর্শ

'বাচ্চারা ঠিকঠাক মতো খেলা করো'
 

গুগলের মৌলিক আদর্শগুলোর একটি ''কখনো দুষ্টতে পরিণত হয়ো না''।

কিন্তু এই কোম্পানি এখনো সেই আদর্শে আছে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত আপনার।

৯. খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার

গুগল কার্যালয়ে সবসময়েই সবার খাবার জন্য কিছু না কিছু রয়েছে
 

ফোবর্সের তথ্য অনুযায়ী, গুগলের পিতা সের্গেই ব্রিন প্রথম দিকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, গুগলের অফিস কখনোই খাবার প্রাপ্তির স্থান থেকে ৬০ মিটারের বেশি দূরত্বে হবে না।

গুজব আছে যে, তখন কোম্পানির সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার ছিল 'সুইডিশ ফিশ', একটি চিবানোর মতো মিষ্টি। কিন্তু এখন গুগলের লোকজনের জন্য নানা ধরণের মাংস আর ভালো মানের কফির ব্যবস্থা রয়েছে।

১০. গুগলের সবচেয়ে ভালো বন্ধু

গুগলের অফিসে নিজের কুকুর নিয়ে আসতে পারেন কর্মীরা
 

গুগলে যারা কাজ করেন, এমনকি যারা নতুন কাজ করতে এসেছেন, তারা সবাই নিজের কুকুর সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারে। তবে এটা প্রমাণ করতে হবে যে, তারা অফিসের ধরণের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত, যেখানে সেখানে হাগুমুগু করে নোংরা করবে না।

আরো কয়েকটি বোনাস পয়েন্ট....

নিউইয়র্কের গুগলের অফিসে লেগোর জন্য আলাদা একটি বিভাগ রয়েছে
 

যদিও গুগলের ইনডেক্স সেই ১৯৯৯ সালের তুলনায় এখন ১০০গুণ বড়, কিন্তু এটি ১০ হাজার গুণ বেশি গতিতে আপডেট করছে।

প্লাস্টিক নির্মাণ খেলনা লেগোর ভক্ত গুগল, এ কারণে প্রথম গুগল কম্পিউটারের স্টোরেজ ইউনিট লেগো ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।

Posted in Personal Blogs on November 23 2020 at 06:41 PM

Comments (1)

No login
color_lens
gif