উদ্যোক্তা শব্দটির প্রচলন যুগ-যুগ থেকে চলে আসছে, আর বর্তমান সময়ের এই শব্দটির নতুন সংস্করণ বলা জেতে পারে ডিজিটাল উদ্যোক্তা। অর্থাৎ প্রযুক্তির ছোঁয়াকে কাজে লাগিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজের এই উদ্যোক্তাসত্তাকে সর্বসাধারণের জন্য প্রস্তুত করাই হচ্ছে ডিজিটাল উদ্যোক্তার কাজ। যার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে হেমি হোসেন। তিনি গত কয়েক বছর যাবত আইটি সেক্টরে তার মেধা, মনবল এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে সাফল্যের সাথে একাধারে কাজ করে যাচ্ছেন এবং স্বপ্ন দেখাচ্ছেন লাখো তরুন-তরুনিদেরকে তাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে।
হেমি হোসেন! ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের নোয়াখালি জেলার লালপুর গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তার। বাবা ছিলেন একজন সরকারী কর্মচারী। বয়স যখন উনিশ ছুই-ছুই তখন তিনি পাড়ি জমান সুদূর অস্ট্রেলিয়ায়। এরপরে বিজনেস ইনফরমেশন সিস্টেমে স্নাতক এবং আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে কর্ম জীবন শুরু করেন তিনি। একে একে কাজ করেন অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শীর্ষ্স্থানীয় ব্যাংকিং এবং ফিনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের সাথে। অস্ট্রেলিয়ার একটি শীর্ষ টেলিযোগাযোগ সংস্থার সাথেও কাজ করেন তিনি। কিন্তু তাতেও তিনি খুব একটা সন্তুষ্ট করতে পারেননি নিজেকে। কারন তার স্বপ্ন ছিল আকাশ সমতুল্য। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, তিনি তার মেধা দিয়ে দেশকে আরো ভালো কিছু দিতে পারবেন। যেমন ভাবলেন ঠিক তেমন টাই করে দেখালেন। তাই চাকরি ছেরে দেয়ার মতোও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও তিনি খুব একটা সময় নেন নি। এবং এরপর থেকেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ধীরে-ধীরে বাস্তবে রুপ নিতে শুরু করলো।
২০১৭ সালে তিনি ‘বর্ষসেরা তরুণ উদ্যোক্তা’ হিসেবে এবং ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় তিনি স্মল বিসনেস ভিক্টোরিয়া থেকে ‘বেস্ট বিজনেস অ্যাওয়ার্ড ইন ২০১৮’ জয় করেন। ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি আমাজনে প্রি-অর্ডারের জন্য প্রকাশিত হওয়ার মাত্র একদিনের মাথায় মার্কিন ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজনের বেস্ট সেলার তালিকায় স্থান পায় তার বই “ফায়ার ইউর বস”। যা কেবল শুধুমাত্র কোন ব্যাক্তিগত সাফল্যের মদ্ধে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তার এই সাফল্য তার সাথে আমাদের দেশেও সমান পরিমাপে বয়ে এনেছে সুনাম।
হেমি হোসেন স্বপ্ন দেখেন, এমন একটা সময় অবশ্যই আসবে যখন “বাংলাদেশের মানুষ চাকরি করবে না, বরং চাকরি দিবে”। তিনি তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এবং তিনি বিশ্বাস করেন একদিন অবশ্যই তার এই স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নিবে।
Comments (0)