উদ্যোক্তা শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। বর্তমানে তরুণ সমাজের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেউ হয়তো নিজের বুটিক শপ খোলে, কেউবা প্লাস্টিক সামগ্রী দিয়ে ছোটখাট একটা ব্যবসা দাঁড় করাচ্ছে, কেউ আবার হয়তো ফ্যাশন হাউজ খুলছে।
উদ্যোক্তা ছোটখাট কোন বিষয় নয়, বরং এর পরিধি বিশাল। একজন উদ্যোক্তা নিজের পরিশ্রমকে শতভাগ সফল করতে পারে, যদি সে তার ব্যবসাকে ডিজিটাল উপায়ে সবার কাছে পৌঁছাতে পারে। এই করোনা মহামারীর সময়ে সবাই অনলাইন কেনাকাটার দিকে ঝুঁকছে। এই সময়টা হচ্ছে অনলাইনে নিজের ব্যবসাকে অনলাইনে নিয়ে আসার চমৎকার একটি সুযোগ।
ডিজিটাল উদ্যোক্তা মানে শুধু অনলাইনে উদ্যোক্তা হওয়া না। একটা ব্যবসাকে ডিজিটালভাবে দাঁড় করানোর জন্য অনেক ছোটখাট বিষয়ের দিকে নজর দিতে হয়। তার সাথে দরকার প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্রও। বেশিরভাগ সময়ে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন না থাকার কারণে তরুণ উদ্যোক্তাদের হতাশ হতে হয়।
হেমি হোসেন এমন এক ব্যক্তির নাম, যিনি বর্তমান ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের কাছে রোল মডেল হিসেবে সুপরিচিত। এক কথায়, তিনি ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর। এর বাইরেও কিন্তু তার আরো পরিচয় আছে। চলুন জেনে নেয়া যাক বিস্তারিত।
কে এই হেমি হোসেন?
হেমি হোসেন একজন সফল ডিজিটাল উদ্যোক্তা। তিনি একাধারে 'বিজনেস কোচ', ডিজিটাল উদ্যোক্তা, লেখক, এবং সুবক্তা। তার আরেকটি বড় পরিচয় উল্লেখ না করলেই নয়। সেটা হচ্ছে, তিনি "Fire Your Boss - Transform Your Life From Employee to Digital Entrepreneur" নামক বইটির লেখক। এই বইটি বিশ্বব্যাপী বেস্ট সেলার বইয়ের খেতাব পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের শীর্ষ ১০ জন ডিজিটাল উদ্যোক্তার মধ্যে হেমি হোসেন অন্যতম একজন। অস্ট্রেলিয়ায় তার দুটি ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট আছে। একটি হচ্ছে Digital Entrepreneur Hub Australia, অপরটি হচ্ছে Grow With Hemi।
হেমি হোসেন এবং ডিজিটাল উদ্যোক্তা
বাংলাদেশে বর্তমানে তরুণ উদ্যোক্তার সংখ্যা খুবই কম। সঠিক গাইডলাইনের অভাবে আমাদের দেশে তরুণ উদ্যোক্তা পাচ্ছি না আমরা। বর্তমানে উচ্চ বেতনের সরকারি বা বেসরকারি চাকরিকেই ধরা হয় উন্নতির শীর্ষ। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, নিয়মমাফিক চাকরিতে বেশীরভাগই অসন্তুষ্ট থাকে। কেউ যদি একটু সাহস করে নিয়মের বাইরে কিছু করার, যেমন ডিজিটাল উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তাও করে, তবু হাজারটা কারণে তাকে পিছপা হতে হয়।
যারা গৎবাঁধা চাকরি ছেড়ে ডিজিটাল উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা করছে, তাদের জন্য হেমি হোসেন একটি চমৎকার উদাহরণ। তিনি স্বপ্নকামী তরুণদের গাইড করতে সিদ্ধহস্ত। তার কাজের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, কিভাবে 'সম্মানীয়' চাকরি ছেড়ে দিয়েও ডিজিটাল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার ও জীবন দুটোই গড়া সম্ভব। তিনি শুধু গাইডলাইনই দেন না, তার পাশাপাশি একজন ডিজিটাল উদ্যোক্তা হতে যেসব টুল প্রয়োজন সেসব দিয়েও তিনি সাহায্য করেন।
তিনি মনে করেন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, এবং সহজলভ্য সম্পদ ইত্যাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার ঘটিয়ে একজন মানুষ নিজের জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে৷ সেই লক্ষ্যেই তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরির জন্য। সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য হেমি হোসেনের কোচিংই যথেষ্ট। একজন মানুষ যদি হেমি হোসেনের ডিজিটাল এন্টারপ্রেনরশীপ প্রোগ্রামে একবার এনরোল করে, তাহলে এক বছরের মধ্যেই সে সফল ডিজিটাল উদ্যোক্তা হতে পারবে।
প্রোগ্রামে যারা অংশগ্রহণ করে, তাদেরকে হেমি হোসেন খুব কাছ থেকে গাইড করেন। মাত্র ১২ মাসের এই প্রোগ্রামে রয়েছে ডিজিটাল এন্টারপ্রেনরশীপের খুঁটিনাটিসহ মূল্যবান আরো অনেককিছু।
পরিশেষে
পুরো বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে পা রেখে। সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাইলে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে পা রাখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। সফল ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে এটা করা সম্ভব। এই ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরির পেছনে হেমি হোসেনের অবদান অনস্বীকার্য। দরকার শুধু একটু সাহস, অসীম মনোবল আর একাগ্রচিত্ত।
Comments (0)