টক্সিক প্যারেন্টিং খুব নোংরা একটা ব্যাপার , আমি এমন অনেক ফ্যামিলিকে চিনি যারা তাদের বাচ্চার টিনেজ , ইউনিভার্সিটির সময়টা নিজে হাতে ধরে সুন্দর করে নষ্ট করে দিয়েছেন এবং এটা করে তারা ভেবেছেন তারা খুব ভালো কাজ করেছেন , সন্তানের মঙ্গলের জন্যই এসব করেছেন ; এতোকিছু করার পরেও তারা ক্লেইম করেছেন তাদের বাচ্চা কিছু পারেনা , তাদের চাওয়া পাওয়া পূরণ করেনি । দিনের পর দিন একটা বাচ্চা একটা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে নিজের জীবনকে চালিয়ে নিচ্ছে , এটা বড় কিছু না ? কী ভাবেন কী ? এই বাচ্চা বড় হলে আপনাদের মন থেকে শ্রদ্ধা করবে ? তার এইসব সময়ের দাম চাইবেনা ? দিতে পারবেন সেইসময়ের কানাকড়ি ফেরত ?
এ উপমহাদেশে মা-বাচ্চা-বাবা’র মতো ডিমান্ডিং সম্পর্ক একটাও নাই , এরা বাচ্চাকে বড় করে একটা ডিপিএস এর মতো , ডিপিএস টা ম্যাচিউর হবে , সেটা থেকে বসে বসে ওনারা ইন্টারেস্ট নেবেন ।
তোর জন্য এটা করেছি , ওটা করেছি !
আরে করলেন কেনো ? আর করে কথাই বলেন কেনো !
এক ছেলে ছিলো আমার পরিচিত , তার বাবা সবকিছুতে ফার্স্ট ছিলেন , ছেলেটি আশানুরূপ কিছু করতে পারেনি ; কথায় কথায় ছেলেটিকে অপমান করা হোতো , যে সে অপমান নয় , ভালোরকম অপমান , এমনকি ছেলেটির বয়স যখন ৩০ , তখনও । ৩১ কি ৩২ বছর বয়সে ছেলেটি মারা যায় , আমার এখন মনে হয় ছেলেটি মরে গিয়ে বেঁচে গেছে , তার মা-বাবার এই যে প্যাসিভ টক্সিডিটি , এ থেকে তার চিরমুক্তি হয়েছে , ছেলেটির বাবা হয়তো এখন ভাবেন , সারাজীবন বকতে বকতে , অপমান করতে করতেই ছেলেটার সাথে জীবন কাটালাম , অনুশোচনাও করেন শুনেছি ।
আমি যে এমন কতো ভয়ংকর কাহিনী জানি , আমার তো সেসব বাচ্চাদের পিঠ চাপড়ে দিতে ইচ্ছে করে যারা এতোকিছু সহ্য করেও এমন মা-বাবাকে শ্রদ্ধা করে ।
সম্পর্কে চাওয়া-পাওয়া আসলে সেটা ভালো সম্পর্ক থাকে না , বাচ্চা পৃথিবীতে এনেছেন , ভালো মানুষ করেছেন এটাই যথেষ্ট , একটা বয়স পর প্রত্যেকের ব্যক্তিস্বাধীনতা আসে , অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসে , তাই সে সময়ের পরে সন্তানের মতের মূল্য দিন আর যদি না পারেন তাহলে চুপ করে বসে থাকেন , একদম চুপ করে , পোলাপানের সময় নষ্ট করার পরেও তারা যেমন চুপ মেরে বসে ছিলো , আপনারাও এখন চুপ মেরে বসে থাকবেন ।
একদিন তো মইরাই যাবো , আমার সাধ আহ্লাদ পূরণ কর , এসব কুমিরের শোক একলা একলা করেন ; খাওয়া-পড়া দিয়া যেমন বাচ্চার সাধ পূরণ করছেন , তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার জীবনের বড় বড় সির্দ্ধান্তগুলো যখন নষ্ট করে দিয়েছেন , তখনই তার শোধ বোধ হয়ে গেছে ।
আমেরিকার মতো দেশে থাকলে আপনারা জেলে থেকে সোজা হয়ে ফেরত আসতেন, ঘরে বসে আহ্লাদ মিটাইলিনা কেনো , এই মেকি কান্না কাদার সময় পাইতেন না ।
Comments (0)