মা-বাবা ঢাকা এসেছেন আজ ভোরে। আমাদের দেখতে। আমরা বাড়ি যাইনা দীর্ঘদিন। কারণ যাওয়া-আসাতে অনেক ভোগান্তি। স্বপ্নের পদ্মাসেতুর কাজ এখনো চলমান। অল্পস্বল্প ছুটি নিয়ে বাড়িতে যেতে তারাই বারণ করেন। মা-বাবা, বাড়ির গাছের কাঁঠাল, কামরাঙা, লেবু, কলা ইত্যাদি ফল নিয়ে এসেছেন সঙে। ভোর ৬ টায় ঘরে ঢুকতেই প্রণাম দিয়ে তাদের মুখ ভালো করে দেখলাম। সারারাত লঞ্চে করে জার্নি করে এসেছেন। চোখেমুখে ক্লান্তি ছিল স্পষ্ট তবে তা উচ্ছ্বাসের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছে।
আমি: তোমাদের কষ্ট হয়নি আসতে?
মা: তোমার ঘুম ভেঙে গেলো আমরা আসাতে।
আমি: কিছু না বলে মাকে বললাম কি কি এনেছো দাও, খাবো।
মা নিজ হাতে কাঁঠাল খুলে দিচ্ছেন আর আমি খাচ্ছি।বাবা তার নাতি মানে আমার ১১ মাস বয়েসি ভাতিজাকে নিয়ে ব্যস্ত।
পুরো ঘরটাকে মনে হচ্ছে একটি সুখের স্বর্গ।
মা: তোমার ঘুম ভেঙে গেলো আমরা আসাতে।
আমি: কিছু না বলে মাকে বললাম কি কি এনেছো দাও, খাবো।
মা নিজ হাতে কাঁঠাল খুলে দিচ্ছেন আর আমি খাচ্ছি।বাবা তার নাতি মানে আমার ১১ মাস বয়েসি ভাতিজাকে নিয়ে ব্যস্ত।
পুরো ঘরটাকে মনে হচ্ছে একটি সুখের স্বর্গ।
আমি অফিসে যেতে যেতে ভাবছি বিধাতা মা-বাবাকে কীভাবে গড়েছেন, আমি কী পারব তাদের প্রাপ্য প্রতিদান দিতে, আরো নানাবিধ কথা।
অফিসের এক কলিগ আজ কথায় কথায় বললেন তার মা যতদিন বাসায় থাকেন ততদিন বাসাটা একটা শান্তির নীড়।আর তিনি চলে গেলেই রাবনের চিতা। তিনি প্রশ্ন ছুড়লেন "মানুষ মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে দেয় কেন?" আমি উত্তর পেলাম না। শুধু বললাম যারা এরকম পাপ করে তাদের ঈশ্বর ক্ষমা করেন না।
অফিস থেকে বাসার কাছে এসে উপরে তাকাতেই দেখি মা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে। কলিং বেল বাজানোর আগেই মা দরজা খুলে দাঁড়িয়ে। মাকে জিজ্ঞেস করলাম তার শরীর ভালো কিনা।
মা: "আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্থ্য মানুষ।"
সোফায় বসে ব্যাগ থেকে আমার চাকুরীর প্রথম বেতনের টাকার খামটা মায়ের হাতে দিলাম। মা গিয়ে বাবার হাতে দিলেন। তারা একে অন্যের চোখে তাকিয়ে কোন কথা না বলে হাসলেন। আমি সে হাসি দেখে ভেজা চোখে আমার রুমে চলে আসলাম। আমি ভাগ্যবান আমার সরকারি চাকুরীর প্রথম বেতন মা-বাবার হাতে দিতে পেরেছি। আমি আজ সবচেয়ে সুখী। আমি ভাগ্যবান যে আমার মা-বাবা দু'জনেই সুস্থ আছেন।
Comments (0)